BIBLIA / BIBLE / ঐশবাণী


THE WORD OF THE LORD / ঐশবাণী / PALABRA DE DIOS


EMMANUEL, "GOS IS WITH US" (CF. MATTHEW 1,23; 28,20)

FIRST BOOK CHAPTER 1-9

INTRODUCTION CHAPTER 1-4

THE SERMON ON THE MOUNT  5-7


THE MINISTRY IN GALILEE 8-9

IF YOU WANT TO DOWNLOAD THE GOSPEL ACCORDING TO MATTHEW IN BANGLA IS AVAILABLE HERE; YOU CAN COPY AND PASTE!

GOD BLESS YOUR READING AND GOD HELPS YOU TO GET SALVATION! SINCERELY GREETINGS FOR OUR COMMUNITY! WE PRAY FOR YOU! PLAESE PRAY FOR US!!!

«12 THE WORD OF GOD is something alive and active: it cuts more incisively than any two-edged sword: it can seek out the place where soul is divided from spirit, or joints from marrow; it can pass judgment on secret emotions and thoughts. 13 No created thing is hidden from him; everything is uncovered and stretched fully open to the eyes of the one to whom we must give account of ourselves.» (NT: HEBREW 4,12-13)


GOD BLESS!

 ঈশ্বর আপনাদের জন্য আশীর্বাদ দান করুণ!

 ¡DIOS TE BENDIGA!

DOWNLOAD : HERE / AQUI   7.6.16 6:16 PM


প্রকৃত জুবিলী বাইবেল হিসেবে বিতরণ বা প্রিন্ট করার লক্ষ্যে ফাইলটি পরিবর্তন করা বিধেয় নয়
কেবল বাংলা ইউনিকোড ফন্টগুলো ব্যবহার্য (বিশেষভাবে Vrinda, Bangla MN, Bangla Sangam MN)অথবা web-site থেকে আশ্রম ফন্ট ডাউনলোড করুন
ফাইলগুলো আপডেট করার জন্য Scriptorium iTools ডাউনলোড করুন
যুক্তাক্ষরগুলো সঠিকভাবে দেখবার জন্য নিম্নতম সিস্টেম: Windows 7, Mac OS 10.7

মথি-রচিত সুসমাচার

মথি|||যীশুখ্রীষ্টের বংশাবলি-পুস্তক, যিনি দাউদসন্তান, আব্রাহামসন্তান
মথি|||আব্রাহাম ইসায়াকের পিতা,
ইসায়াক যাকোবের পিতা,
যাকোব যুদা ও তাঁর ভাইদের পিতা,
মথি|||যুদা পেরেস ও জেরাহ্‌র পিতা, যাঁদের মাতা তামার,
পেরেস হেস্রোনের পিতা,
হেস্রোন আরামের পিতা,
মথি|||আরাম আম্মিনাদাবের পিতা,
আম্মিনাদাব নাহসোনের পিতা,
নাহসোন সালমোনের পিতা,
মথি|||সালমোন বোয়াজের পিতা, যাঁর মাতা রাহাব,
বোয়াজ ওবেদের পিতা, যাঁর মাতা রুথ,
ওবেদ যেসের পিতা,
মথি|||যেসে দাউদ রাজার পিতা
দাউদ সলোমনের পিতা, যাঁর মাতা উরিয়ার আগেকার স্ত্রী,
মথি|||সলোমন রেহোবোয়ামের পিতা,
রেহোবোয়াম আবিয়ার পিতা,
আবিয়া আসার পিতা,
মথি|||আসা যোসাফাতের পিতা,
যোসাফাৎ যোরামের পিতা,
যোরাম উজ্জিয়ার পিতা,
মথি|||উজ্জিয়া যোথামের পিতা,
যোথাম আহাজের পিতা,
আহাজ হেজেকিয়ার পিতা,
মথি||১০|হেজেকিয়া মানাসের পিতা,
মানাসে আমোনের পিতা,
আমোন যোসিয়ার পিতা,
মথি||১১|যোসিয়া যেকোনিয়া ও তাঁর ভাইদের পিতা
সেসময়ে বাবিলনে নির্বাসন ঘটে
মথি||১২|বাবিলনে নির্বাসনের পরে:
যেকোনিয়া শেয়াল্টিয়েলের পিতা,
শেয়াল্টিয়েল জেরুব্বাবেলের পিতা,
মথি||১৩|জেরুব্বাবেল আবিয়ুদের পিতা,
আবিয়ুদ এলিয়াকিমের পিতা,
এলিয়াকিম আজোরের পিতা,
মথি||১৪|আজোর সাদোকের পিতা,
সাদোক আখিমের পিতা,
আখিম এলিয়ুদের পিতা,
মথি||১৫|এলিয়ুদ এলেয়াজারের পিতা,
এলেয়াজার মাত্থানের পিতা,
মাত্থান যাকোবের পিতা,
মথি||১৬|যাকোব মারীয়ার স্বামী যোসেফের পিতা
এই মারীয়ার গর্ভে খ্রীষ্ট বলে অভিহিত যীশুর জন্ম হয়
মথি||১৭|সুতরাং আব্রাহাম থেকে দাউদ পর্যন্ত সবসমেত চৌদ্দ পুরুষ, দাউদ থেকে বাবিলনে নির্বাসন পর্যন্ত চৌদ্দ পুরুষ, এবং বাবিলনে নির্বাসন থেকে খ্রীষ্ট পর্যন্ত চৌদ্দ পুরুষ
মথি||১৮|যীশুখ্রীষ্টের জন্ম এভাবে হয়: তাঁর মা মারীয়া যোসেফের প্রতি বাগ্‌দত্তা হলে তাঁরা একসঙ্গে থাকার আগে দেখা গেল, তিনি গর্ভবতীপবিত্র আত্মার প্রভাবে
মথি||১৯|তাঁর স্বামী যোসেফ যেহেতু ধর্মনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন, আবার তাঁকে প্রকাশ্যে নিন্দার পাত্র করতে অনিচ্ছুক ছিলেন বিধায় তাঁকে গোপনেই ত্যাগ করার সঙ্কল্প নিলেন
মথি||২০|তিনি এ সমস্ত ভাবছেন, এমন সময় দেখ, প্রভুর দূত স্বপ্নে তাঁকে দেখা দিয়ে বললেন, ‘দাউদসন্তান যোসেফ, তোমার স্ত্রী মারীয়াকে গ্রহণ করে নিতে ভয় করো না, কেননা তার গর্ভে যা জন্মেছে, তা পবিত্র আত্মার প্রভাবেই হয়েছে;
মথি||২১|সে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করবে আর তুমি তাঁর নাম যীশু রাখবে, কারণ তিনিই নিজ জনগণকে তাদের পাপ থেকে ত্রাণ করবেন
মথি||২২|এই সমস্ত ঘটল যেন নবীর মধ্য দিয়ে উচ্চারিত প্রভুর এই বচন পূর্ণ হয়:
মথি||২৩|দেখ, কুমারীটি গর্ভবতী হয়ে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করবে,
আর লোকে তাঁকে ইম্মানুয়েল বলে ডাকবে,
নামটির অর্থ হল, আমাদের-সঙ্গে-ঈশ্বর
মথি||২৪|যোসেফ ঘুম থেকে জেগে উঠে, প্রভুর দূত তাঁকে যেমন আদেশ করেছিলেন, সেইমত করলেন: তিনি নিজ স্ত্রীকে গ্রহণ করে নিলেন
মথি||২৫|ইনি পুত্রকে প্রসব করার আগে তাঁর সঙ্গে যোসেফের কখনও মিলন হয়নি; তিনি তাঁর নাম যীশু রাখলেন
মথি|||হেরোদ রাজার সময়ে যুদেয়ার বেথলেহেমে যীশুর জন্ম হওয়ার পর হঠাৎ প্রাচ্য দেশ থেকে কয়েকজন পণ্ডিত যেরুসালেমে এসে
মথি|||জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইহুদীদের নবজাত রাজা কোথায়? আমরা পুবে তাঁর জ্যোতিষ্ক দেখেছি, ও তাঁর সামনে প্রণিপাত করতে এসেছি
মথি|||একথা শুনে হেরোদ রাজা উদ্বিগ্ন হলেন, ও তাঁর সঙ্গে গোটা যেরুসালেমও উদ্বিগ্ন হল
মথি|||সকল প্রধান যাজক ও জাতির শাস্ত্রীদের সমবেত করে তিনি তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, সেই খ্রীষ্টের কোথায় জন্মাবার কথা
মথি|||তাঁরা তাঁকে বললেন: যুদেয়ার বেথলেহেমে, কেননা নবী যে কথা লিখেছিলেন, তা এ:
মথি|||যুদা দেশের হে বেথলেহেম,
যুদার জননেতাদের মধ্যে তুমি আদৌ হীনতম নও,
কারণ তোমা থেকেই বের হবেন এক জননেতা,
যিনি আমার জনগণ ইস্রায়েলকে প্রতিপালন করবেন
মথি|||তখন হেরোদ সেই পণ্ডিতদের গোপনে ডেকে কোন্‌সময়ে জ্যোতিষ্কটা দেখা দিয়েছিল, তাঁদের কাছ থেকে তা সঠিক ভাবে জেনে নিলেন,
মথি|||এবং এই বলে তাঁদের বেথলেহেমে পাঠিয়ে দিলেন, ‘আপনারা গিয়ে ভাল করেই সেই শিশুর খোঁজ নিন; খোঁজ পেলেই আমাকে সংবাদ দিন, যেন আমিও গিয়ে তাঁর সামনে প্রণিপাত করতে পারি
মথি|||রাজার কথামত তাঁরা বিদায় নিলেন, আর দেখ, পুবে তাঁরা যে জ্যোতিষ্ক দেখেছিলেন, তা তাঁদের আগে আগে চলল, যতক্ষণ না সেই স্থানের উপর এসে থামল যেখানে শিশুটি ছিলেন
মথি||১০|জ্যোতিষ্কটা দেখতে পেয়ে তাঁরা মহা আনন্দে অতিশয় আনন্দিত হলেন;
মথি||১১|এবং ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে শিশুটিকে তাঁর মা মারীয়ার সঙ্গে দেখতে পেলেন; তখন ভূমিষ্ঠ হয়ে তাঁর সামনে প্রণিপাত করলেন; পরে নিজেদের রত্নপেটিকা খুলে তাঁকে উপহার দিলেন সোনা, ধূপধুনো ও গন্ধনির্যাস
মথি||১২|পরে যেন হেরোদের কাছে ফিরে না যান, স্বপ্নে তেমন আদেশ পেয়ে তাঁরা অন্য পথ দিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন
মথি||১৩|তাঁরা চলে গেলে পর প্রভুর দূত হঠাৎ স্বপ্নে যোসেফকে দেখা দিয়ে বললেন, ‘ওঠ, শিশুটিকে ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও; আর আমি তোমাকে না বলা পর্যন্ত তুমি সেখানে থাক; কেননা হেরোদ শিশুটিকে হত্যা করার জন্য খোঁজ করতে যাচ্ছে
মথি||১৪|তাই যোসেফ উঠে সেই রাতে শিশুটিকে ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে মিশরে চলে গেলেন,
মথি||১৫|এবং হেরোদের মৃত্যু পর্যন্ত সেখানে থাকলেন, যেন নবীর মধ্য দিয়ে উচ্চারিত প্রভুর এই বচন পূর্ণ হয়:
আমি মিশর থেকে আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম
মথি||১৬|পণ্ডিতেরা তাঁকে প্রবঞ্চনা করেছেন, তা বুঝতে পেরে হেরোদ অধিক ক্রুদ্ধ হয়ে উঠলেন, এবং সেই পণ্ডিতদের কাছ থেকে যে সময়ের কথা জেনে নিয়েছিলেন, সেই অনুসারে দুবছর বা তার কম বয়সের যত ছেলে বেথলেহেমে ও তার সমস্ত অঞ্চলে ছিল, তাদের সকলকে হত্যা করালেন
মথি||১৭|তখন নবী যেরেমিয়ার মধ্য দিয়ে উচ্চারিত এই বচন পূর্ণ হল:
মথি||১৮|রামায় শোনা গেল এক সুর,
বিলাপ ও তিক্ত কান্নার সুর:
রাখেল নিজ ছেলেদের জন্য কাঁদছেন;
কোন সান্ত্বনা মানছেন না,
কারণ তারা আর নেই!
মথি||১৯|হেরোদের মৃত্যু হলে পর প্রভুর দূত মিশরে হঠাৎ যোসেফকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে
মথি||২০|বললেন, ‘ওঠ, শিশুটিকে ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে ফিরে যাও, কারণ যারা শিশুটির প্রাণনাশে সচেষ্ট ছিল, তারা মারা গেছে
মথি||২১|আর তিনি উঠে শিশুটিকে ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে ফিরে গেলেন
মথি||২২|কিন্তু যখন শুনতে পেলেন যে, আর্খেলাওস নিজ পিতা হেরোদের স্থানে যুদেয়ায় রাজত্ব করছেন, তখন সেখানে যেতে ভয় করলেন; পরে স্বপ্নে আদেশ পেয়ে তিনি গালিলেয়া প্রদেশে চলে গেলেন;
মথি||২৩|সেখানে নাজারেথ নামে এক শহরে বাস করতে গেলেন, যেন নবীর মধ্য দিয়ে উচ্চারিত এই বচন পূর্ণ হয়,
তিনি নাজারীয় বলে অভিহিত হবেন
মথি|||নির্ধারিত সময়ে দীক্ষাগুরু যোহন আবির্ভূত হলেন; তিনি যুদেয়ার মরুপ্রান্তরে প্রচার করতেন;
মথি|||তিনি বলতেন: মনপরিবর্তন কর, কেননা স্বর্গরাজ্য কাছে এসে গেছে
মথি|||ইনিই সেই ব্যক্তি যাঁর বিষয়ে নবী ইসাইয়া বলেছিলেন,
এমন একজনের কণ্ঠস্বর
যে মরুপ্রান্তরে চিৎকার করে বলে,
প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত কর,
তাঁর রাস্তা সমতল কর
মথি|||এই যোহন উটের লোমের এক কাপড় পরতেন, তাঁর কোমরে চামড়ার বন্ধনী, ও তাঁর খাদ্য পঙ্গপাল ও বনের মধু ছিল
মথি|||তখন যেরুসালেম, সমস্ত যুদেয়া ও যর্দনের নিকটবর্তী সমস্ত অঞ্চলের লোক তাঁর কাছে যেতে লাগল,
মথি|||ও নিজেদের পাপ স্বীকার করে যর্দন নদীতে তাঁর হাতে দীক্ষাস্নাত হতে লাগল
মথি|||কিন্তু অনেক ফরিসি ও সাদুকি দীক্ষাস্নানের জন্য আসছে দেখে তিনি তাদের বললেন, ‘হে সাপের বংশ, আসন্ন ক্রোধ থেকে পালাতে তোমাদের কে চেতনা দিল?
মথি|||অতএব এমন এক ফল দেখাও, যা তোমাদের মনপরিবর্তনের যোগ্য ফল
মথি|||আর এমনটি ভাববে না যে তোমরা মনে মনে বলতে পার, আব্রাহাম আমাদের পিতা; কেননা আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বর এ সমস্ত পাথর থেকে আব্রাহামের জন্য সন্তানদের উদ্ভব ঘটাতে পারেন
মথি||১০|আর এখনই তো গাছগুলোর শিকড়ে কুড়ালটা লাগানো রয়েছে; অতএব, যে কোন গাছে উত্তম ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হবে
মথি||১১|আমি মনপরিবর্তনের উদ্দেশে জলে তোমাদের দীক্ষাস্নাত করি বটে, কিন্তু আমার পরে যিনি আসছেন, তিনি আমার চেয়ে শক্তিশালী; আমি তাঁর জুতো খুলবার যোগ্য নই; তিনি পবিত্র আত্মা ও আগুনেই তোমাদের দীক্ষাস্নাত করবেন
মথি||১২|তাঁর কুলা তাঁর হাতে রয়েছে, আর তিনি নিজ খামার পরিষ্কার করবেন, ও নিজ গম গোলায় সংগ্রহ করবেন, কিন্তু তুষ অনির্বাণ আগুনে পুড়িয়ে দেবেন
মথি||১৩|পরে যীশু আবির্ভূত হলেন; তিনি যোহনের হাতে দীক্ষাস্নাত হবার জন্য গালিলেয়া থেকে যর্দনের ধারে তাঁর কাছে এলেন
মথি||১৪|যোহন এই বলে তাঁকে নিরস্ত করতে চেষ্টা করলেন, ‘আমারই তো আপনার হাতে দীক্ষাস্নাত হওয়া দরকার, আর আপনি নাকি আমার কাছে আসছেন!
মথি||১৫|কিন্তু যীশু উত্তরে তাঁকে বললেন, ‘এখনকার মত সম্মত হও, কেননা এভাবেই সমস্ত ধর্মময়তা সাধন করা আমাদের পক্ষে সমীচীনতখন তিনি তাঁর কথায় সম্মত হলেন
মথি||১৬|দীক্ষাস্নাত হওয়ামাত্র যীশু জল থেকে উঠে এলেন, আর হঠাৎ স্বর্গ উন্মুক্ত হল, আর তিনি দেখলেন, ঈশ্বরের আত্মা কপোতের মত নেমে এসে তাঁর উপরে পড়ছেন
মথি||১৭|আর হঠাৎ স্বর্গ থেকে এক কণ্ঠস্বর বলে উঠল, ‘ইনিই আমার প্রিয়তম পুত্র, এঁতে আমি প্রসন্ন
মথি|||তখন যীশু দিয়াবল দ্বারা পরীক্ষিত হবার জন্য আত্মা দ্বারা প্রান্তরে চালিত হলেন;
মথি|||চল্লিশদিন চল্লিশরাত অনাহারে থাকার পর তিনি ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লেন
মথি|||মানুষকে যে পরীক্ষা করে, সে তখন তাঁকে এসে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে বল, যেন এই পাথরগুলো রুটি হয়ে যায়
মথি|||কিন্তু তিনি উত্তরে বললেন, ‘লেখা আছে,
মানুষ কেবল রুটিতে বাঁচবে না,
কিন্তু ঈশ্বরের মুখ থেকে যে প্রতিটি উক্তি নির্গত হয়,
তাতেই বাঁচবে
মথি|||তখন দিয়াবল তাঁকে পবিত্র নগরীতে নিয়ে গেল, ও মন্দিরের চূড়ার উপরে দাঁড় করিয়ে তাঁকে
মথি|||বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে নিচে ঝাঁপ দিয়ে পড়, কেননা লেখা আছে,
তোমার জন্যই আপন দূতদের তিনি আজ্ঞা দিলেন;
আর তাঁরা তোমায় দুহাতে তুলে বহন করবেন,
পাথরে তোমার পায়ে যেন কোন আঘাত না লাগে
মথি|||যীশু তাকে বললেন, ‘আরও লেখা আছে:
তোমার ঈশ্বর প্রভুকে তুমি পরীক্ষা করো না
মথি|||আবার দিয়াবল তাঁকে অধিক উচ্চ এক পর্বতে নিয়ে গেল, ও জগতের সকল রাজ্য ও তাদের গৌরব দেখিয়ে
মথি|||তাঁকে বলল, ‘তুমি যদি ভূমিষ্ঠ হয়ে আমার সামনে প্রণিপাত কর, তবে এই সমস্ত কিছু আমি তোমাকে দেব
মথি||১০|তখন যীশু তাকে বললেন, ‘দূর হও, শয়তান; কেননা লেখা আছে,
তোমার ঈশ্বর প্রভুকেই প্রণাম করবে,
কেবল তাঁকেই উপাসনা করবে
মথি||১১|তখন দিয়াবল তাঁকে ছেড়ে চলে গেল, আর হঠাৎ দূতেরা কাছে এসে তাঁর সেবা করতে লাগলেন
মথি||১২|যোহনকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে শুনে যীশু গালিলেয়ায় সরে গেলেন,
মথি||১৩|এবং নাজারা ছেড়ে সমুদ্রতীরে, জাবুলোন-নেফ্তালির অঞ্চলে অবস্থিত কাফার্নাউমে বাস করতে গেলেন,
মথি||১৪|যেন নবী ইসাইয়ার মধ্য দিয়ে উচ্চারিত এই বচন পূর্ণ হয়:
মথি||১৫|জাবুলোন দেশ! নেফ্তালি দেশ!
সমুদ্রপথের, যর্দনের ওপারের বিজাতীয়দের সেই গালিলেয়া!
মথি||১৬|যে জাতি অন্ধকারে বসে ছিল,
তারা মহান এক আলো দেখতে পেল;
যারা মৃত্যু-ছায়ার দেশে বসে ছিল,
তাদের উপর এক আলো উদিত হল
মথি||১৭|এসময় থেকেই যীশু প্রচার করতে শুরু করলেন; তিনি বলছিলেন: মনপরিবর্তন কর, কেননা স্বর্গরাজ্য কাছে এসে গেছে
মথি||১৮|তিনি গালিলেয়া সাগরের তীর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখতে পেলেন, দুই ভাইসিমোন ওরফে পিতর ও তাঁর ভাই আন্দ্রিয়সমুদ্রে জাল ফেলছেন, কারণ তাঁরা জেলে ছিলেন
মথি||১৯|তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমার পিছনে এসো; আমি তোমাদের করে তুলব মানুষ-ধরা জেলে
মথি||২০|আর তখনই তাঁরা জাল ফেলে রেখে তাঁর অনুসরণ করলেন
মথি||২১|আর সেখান থেকে এগিয়ে গিয়ে তিনি দেখলেন, অন্য দুই ভাইজেবেদের ছেলে যাকোব ও তাঁর ভাই যোহননিজেদের পিতা জেবেদের সঙ্গে নৌকায় নিজেদের জাল সারাচ্ছিলেন; তিনি তাঁদের ডাকলেন;
মথি||২২|আর তখনই তাঁরা নৌকা ও নিজেদের পিতাকে ফেলে রেখে তাঁর অনুসরণ করলেন
মথি||২৩|তিনি সারা গালিলেয়া জুড়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন: তাদের সমাজগৃহে উপদেশ দিতেন, রাজ্যের শুভসংবাদ প্রচার করতেন, ও জনগণের মধ্যে সব ধরনের রোগ ও সব ধরনের ব্যাধি নিরাময় করতেন
মথি||২৪|তাঁর নাম সমগ্র সিরিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল; এবং যত লোক নানা ধরনের রোগ ও পীড়ায় পীড়িত ছিল, যারা অপদূতগ্রস্ত কিংবা মৃগী বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত ছিল, তাদের সকলকে তাঁর কাছে আনা হত, আর তিনি তাদের নিরাময় করতেন
মথি||২৫|গালিলেয়া, দেকাপলিস, যেরুসালেম, যুদেয়া ও যর্দনের ওপার থেকে বহু বহু লোক তাঁর অনুসরণ করতে লাগল
মথি|||তিনি লোকের ভিড় দেখে পর্বতে গিয়ে উঠলেন, এবং তিনি আসন নেবার পর তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এগিয়ে এলেন
মথি|||তখন তিনি কথা বলতে শুরু করে তাঁদের এই উপদেশ দিতে লাগলেন
মথি|||‘আত্মায় দীনহীন যারা, তারাই সুখী, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই
মথি|||শোকার্ত যারা, তারাই সুখী, কারণ তারাই সান্ত্বনা পাবে
মথি|||কোমলপ্রাণ যারা, তারাই সুখী, কারণ তারাই পাবে দেশের উত্তরাধিকার
মথি|||ধর্মময়তার জন্য ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত যারা, তারাই সুখী,
কারণ তারাই পরিতৃপ্ত হবে
মথি|||দয়াবান যারা, তারাই সুখী, কারণ তারাই দয়া পাবে
মথি|||শুদ্ধহৃদয় যারা, তারাই সুখী, কারণ তারাই ঈশ্বরকে দেখতে পাবে
মথি|||শান্তির সাধক যারা, তারাই সুখী,
কারণ তারাই ঈশ্বরের সন্তান বলে অভিহিত হবে
মথি||১০|ধর্মময়তার জন্য নির্যাতিত যারা, তারাই সুখী, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই
মথি||১১|তোমরাই সুখী, লোকে যখন আমার জন্য তোমাদের নিন্দা ও নির্যাতন করে, এবং তোমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যামিথ্যি সব ধরনের জঘন্য কথা বলে
মথি||১২|আনন্দ কর, উল্লাস কর, কেননা স্বর্গে তোমাদের মজুরি প্রচুর বাস্তবিকই তোমাদের আগে তারা নবীদেরও এভাবেই নির্যাতন করল
মথি||১৩|‘তোমরা পৃথিবীর লবণ, কিন্তু লবণ নিঃস্বাদ হয়ে গেলে, তবে কী করেই বা তা আবার নোনতা করা যাবে? তা আর কোন কাজে লাগে না; তা শুধু বাইরে ফেলে দেওয়া হবে যেন লোকে তা পায়ে মাড়িয়ে দেয়
মথি||১৪|তোমরা জগতের আলো; পর্বতের উপরে অবস্থিত কোন নগর গুপ্ত থাকতে পারে না
মথি||১৫|আর লোকে প্রদীপ জ্বালিয়ে তা ধামার নিচে রাখে না, দীপাধারের উপরেই রাখে; তবে ঘরের সকলের জন্য তা আলো দেবে
মথি||১৬|তেমনি তোমাদের আলো মানুষের সামনে উজ্জ্বল হোক, যেন তারা তোমাদের সৎকর্ম দেখে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার গৌরবকীর্তন করে
মথি||১৭|মনে করো না যে, আমি বিধান-পুস্তক বা নবী-পুস্তক বাতিল করতে এসেছি; আমি বাতিল করতে আসিনি, পূর্ণই করতে এসেছি
মথি||১৮|আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতদিন আকাশ ও পৃথিবী বিলুপ্ত না হয়, ততদিন বিধানের এক মাত্রা বা এক বিন্দুও লোপ পাবে নাযতদিন না সবই সম্পন্ন হয়
মথি||১৯|অতএব যে কেউ এই সমস্ত আজ্ঞার মধ্যে ক্ষুদ্রতম আজ্ঞাগুলোর একটাও লঙ্ঘন করে ও মানুষকে সেইমত করতে শেখায়, তাকে স্বর্গরাজ্যে ক্ষুদ্রতম বলে গণ্য করা হবে; কিন্তু যে কেউ সেগুলো পালন করে ও শিখিয়ে দেয়, তাকে স্বর্গরাজ্যে মহান বলে গণ্য করা হবে
মথি||২০|কেননা আমি তোমাদের বলছি, শাস্ত্রী ও ফরিসিদের চেয়ে তোমাদের ধর্মিষ্ঠতা যদি গভীরতর না হয়, তবে তোমরা স্বর্গরাজ্যে কখনও প্রবেশ করবে না
মথি||২১|তোমরা শুনেছ, প্রাচীনকালের মানুষদের কাছে বলা হয়েছিল, তুমি নরহত্যা করবে না, আর যে নরহত্যা করে, সে বিচারাধীন হবে
মথি||২২|কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ নিজের ভাইয়ের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়, সে বিচারাধীন হবে; আর যে কেউ নিজের ভাইকে নির্বোধ বলে, সে বিচারসভার অধীন হবে; আর যে কেউ তাকে পাষণ্ড বলে, সে নরকের আগুনের অধীন হবে
মথি||২৩|তাই তুমি যখন যজ্ঞবেদির কাছে নিজ নৈবেদ্য উৎসর্গ করছ, তখন সেই স্থানে যদি মনে পড়ে যে, তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভাইয়ের কোন কথা আছে,
মথি||২৪|তবে সেই স্থানে বেদির সামনে তোমার সেই নৈবেদ্য ফেলে রেখে চলে যাও: প্রথমে তোমার ভাইয়ের সঙ্গে পুনর্মিলিত হও, পরে এসে তোমার সেই নৈবেদ্য উৎসর্গ কর
মথি||২৫|প্রতিপক্ষের সঙ্গে পথে থাকতেই তুমি দেরি না করে তার সঙ্গে ব্যাপারটা মিটিয়ে নাও, পাছে প্রতিপক্ষ তোমাকে বিচারকের হাতে তুলে দেয়, বিচারক তোমাকে প্রহরীর হাতে তুলে দেয়, ও তুমি কারাগারে নিক্ষিপ্ত হও
মথি||২৬|আমি তোমাকে সত্যি বলছি, শেষ কড়িটা শোধ না করা পর্যন্ত তুমি কোনমতে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না
মথি||২৭|তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, তুমি ব্যভিচার করবে না
মথি||২৮|কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ কোন স্ত্রীলোকের দিকে লালসার চোখে তাকায়, সে ইতিমধ্যেই মনে মনে তার সঙ্গে ব্যভিচার করে ফেলেছে
মথি||২৯|তোমার ডান চোখ যদি তোমার পদস্খলনের কারণ হয়, তবে তা উপড়ে দূরে ফেলে দাও, কেননা তোমার গোটা শরীরটা নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে একটা অঙ্গের বিনাশ হওয়াই বরং তোমার পক্ষে ভাল
মথি||৩০|আর তোমার ডান হাত যদি তোমার পদস্খলনের কারণ হয়, তবে তা কেটে দূরে ফেলে দাও, কেননা তোমার গোটা শরীরটা নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে একটা অঙ্গের বিনাশ হওয়াই বরং তোমার পক্ষে ভাল
মথি||৩১|আরও বলা হয়েছিল, যে কেউ নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করে, সে তাকে ত্যাগপত্র দিয়ে দিক
মথি||৩২|কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ অবৈধ সম্পর্কের কারণ ছাড়া অন্য কারণেই নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করে, সে তাকে ব্যভিচারিণী করে; এবং যে কেউ পরিত্যক্তা কোন স্ত্রীলোককে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে
মথি||৩৩|আবার তোমরা শুনেছ, প্রাচীনকালের মানুষদের কাছে বলা হয়েছিল, তুমি মিথ্যা শপথ করবে না; কিন্তু প্রভুর কাছে তোমার শপথ সকল রক্ষা কর
মথি||৩৪|কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, কোন শপথও করো না; স্বর্গের দিব্যি দিয়েও নয়, কেননা তা ঈশ্বরের সিংহাসন;
মথি||৩৫|পৃথিবীর দিব্যি দিয়েও নয়, কেননা তা তাঁর পাদপীঠ; যেরুসালেমের দিব্যি দিয়েও নয়, কেননা তা মহান রাজার নগরী;
মথি||৩৬|তোমার নিজের মাথার দিব্যি দিয়েও শপথ করো না, যেহেতু একগাছি চুল সাদা কি কালো করার সাধ্য তোমার নেই
মথি||৩৭|কিন্তু তোমাদের কথা এ-ই হোক: হ্যাঁ, হ্যাঁ, না, না; এর অতিরিক্ত যা, তা সেই ধূর্তজন থেকেই আগত
মথি||৩৮|তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, চোখের বদলে চোখ ও দাঁতের বদলে দাঁত
মথি||৩৯|কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, দুর্জনকে প্রতিরোধ করো না; বরং যে কেউ তোমার ডান গালে চড় মারে, অন্য গালও তার দিকে ফিরিয়ে দাও;
মথি||৪০|যে তোমার সঙ্গে বিচারালয়ে মামলা করে তোমার জামাটা নিতে চায়, তাকে চাদরও নিতে দাও
মথি||৪১|যে কেউ এক মাইল যেতে তোমাকে বাধ্য করে, তার সঙ্গে দুই মাইল পথ চল
মথি||৪২|যে কেউ তোমার কাছে যাচনা করে, তাকে দাও, আর কেউ তোমার কাছে ধার চাইলে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না
মথি||৪৩|তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসবে ও তোমার শত্রুকে ঘৃণা করবে
মথি||৪৪|কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালবাস, ও যারা তোমাদের নির্যাতন করে, তাদের মঙ্গল প্রার্থনা কর,
মথি||৪৫|যেন তোমরা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার সন্তান হতে পার, কারণ তিনি ভাল মন্দ সকলের উপরেই নিজের সূর্য জাগান, ও ধার্মিক অধার্মিক সকলের উপরেই বৃষ্টি নামিয়ে আনেন
মথি||৪৬|কেননা যারা তোমাদের ভালবাসে, তাদেরই ভালবাসলে তোমাদের কী মজুরি হবে? কর-আদায়কারীরাও কি সেইমত করে না?
মথি||৪৭|আর তোমরা যদি কেবল নিজ নিজ ভাইদের সঙ্গেই কুশল আলাপ কর, তবে অসাধারণ কীবা কর? বিজাতীয়রাও কি সেইমত করে না?
মথি||৪৮|অতএব এক্ষেত্রে তোমাদের যেন কোন সীমা না থাকে, যেমনটি তোমাদের স্বর্গস্থ পিতারও কোন সীমা নেই
মথি|||সাবধান, দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য লোকদের সামনে তোমাদের ধর্মকর্ম করো না, করলে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার কাছে তোমাদের কোন মজুরি থাকবে না
মথি|||তাই তুমি যখন ভিক্ষা দাও, তখন তোমার সামনে তুরি বাজাবে না, যেমনটি ভণ্ডরা লোকদের কাছে গৌরব পাবার জন্য সমাজগৃহে ও রাস্তা-ঘাটে করে থাকে; আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা নিজেদের মজুরি পেয়েই গেছে
মথি|||কিন্তু তুমি যখন ভিক্ষা দাও, তখন তোমার ডান হাত যে কী করছে, তোমার বাঁ হাত যেন তা জানতে না পারে,
মথি|||যাতে তোমার ভিক্ষাদান গোপন থাকে; তবে যিনি গোপন সবকিছু দেখেন, তোমার সেই পিতা তোমাকে প্রতিদান দেবেন
মথি|||আর তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন ভণ্ডদের মত হয়ো না; কারণ তারা সমাজগৃহে ও চৌরাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করতে ভালবাসে, যেন লোকে তাদের দেখতে পায়; আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা নিজেদের মজুরি পেয়েই গেছে
মথি|||কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা কর, তখন তোমার নিজের কক্ষে প্রবেশ কর, আর দরজা বন্ধ করে তোমার পিতা, যিনি সেই গোপন স্থানে বিদ্যমান, তাঁর কাছে প্রার্থনা কর; তবে যিনি গোপন সবকিছু দেখেন, তোমার সেই পিতা তোমাকে প্রতিদান দেবেন
মথি|||প্রার্থনাকালে তোমরা অযথা বেশি কথা বলো না, যেমনটি বিজাতিরা করে থাকে, কেননা তারা মনে করে, বহু কথার জোরেই তাদের প্রার্থনা গ্রাহ্য হবে
মথি|||তাই তোমরা তাদের মত হয়ো না, কেননা তোমাদের কী কী প্রয়োজন, যাচনা করার আগে তোমাদের পিতা তা জানেন
মথি|||সুতরাং তোমাদের এভাবে প্রার্থনা করা উচিত:
হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতা,
তোমার নামের পবিত্রতা প্রকাশিত হোক,
মথি||১০|তোমার রাজ্যের আগমন হোক,
তোমার ইচ্ছা যেমন স্বর্গে
তেমনি মর্তেও পূর্ণ হোক
মথি||১১|আমাদের দৈনিক খাদ্য আজ আমাদের দান কর;
মথি||১২|এবং আমাদের অপরাধ ক্ষমা কর,
যেমন আমরাও আমাদের অপরাধীদের ক্ষমা করেছি;
মথি||১৩|আর আমাদের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে দিয়ো না,
কিন্তু সেই ধূর্তজনের হাত থেকে আমাদের নিস্তার কর
মথি||১৪|তোমরা যদি পরের দোষত্রুটি ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তোমাদেরও ক্ষমা করবেন;
মথি||১৫|কিন্তু তোমরা যদি পরকে ক্ষমা না কর, তবে তোমাদের পিতা তোমাদেরও দোষত্রুটি ক্ষমা করবেন না
মথি||১৬|আর তোমরা যখন উপবাস কর, তখন ভণ্ডদের মত বিষণ্ণ ভাব দেখিয়ো না; কেননা তারা যে উপবাস করছে, তা লোকদের দেখাবার জন্যই নিজেদের মুখ মলিন করে; আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা নিজেদের মজুরি পেয়েই গেছে
মথি||১৭|কিন্তু তুমি যখন উপবাস কর, তখন মাথায় তেল মাখ ও মুখ ধুয়ো,
মথি||১৮|যেন কেউই তোমার উপবাস না দেখতে পায়, কিন্তু তোমার পিতা, যিনি সেই গোপন স্থানে বিদ্যমান, কেবল তিনিই যেন তা দেখতে পান; তবে যিনি গোপন সবকিছু দেখেন, তোমার সেই পিতা তোমাকে প্রতিদান দেবেন
মথি||১৯|তোমরা পৃথিবীতে নিজেদের জন্য ধন জমিয়ে রেখো না: এখানে তো পোকা ও মরচে ধরে তা ক্ষয় করে, এবং চোরে সিঁধ কেটে চুরি করে
মথি||২০|স্বর্গেই নিজেদের জন্য ধন জমিয়ে রাখ: সেখানে পোকা ও মরচে ধরে তা ক্ষয় করে না, চোরেও সিঁধ কেটে চুরি করে না
মথি||২১|কারণ যেখানে তোমার ধন রয়েছে, সেখানে তোমার হৃদয়ও থাকবে
মথি||২২|চোখ-ই দেহের প্রদীপ; সুতরাং তোমার চোখ সরল হলে তোমার গোটা দেহ আলোময় হবে;
মথি||২৩|কিন্তু তোমার চোখ খারাপ হলে তোমার গোটা দেহ অন্ধকারময় হবে তাই তোমার অন্তরে যে আলো রয়েছে, তা অন্ধকার হলে সেই অন্ধকার কতই না বড় হবে!
মথি||২৪|দুই মনিবের সেবায় থাকা কারও পক্ষে সম্ভব নয়: সে হয় একজনকে ঘৃণা করবে আর অন্যজনকে ভালবাসবে, না হয় একজনের প্রতি আকৃষ্ট হবে আর অন্যজনকে উপেক্ষা করবেঈশ্বর ও ধন, উভয়ের সেবায় থাকা তোমাদের পক্ষে সম্ভব নয়
মথি||২৫|এজন্য আমি তোমাদের বলছি, কী খাব, কী পান করব বলে প্রাণের বিষয়ে, কিংবা কী পরব বলে শরীরের বিষয়ে চিন্তিত হয়ো না; খাদ্যের চেয়ে প্রাণ ও পোশাকের চেয়ে শরীর কি বড় ব্যাপার নয়?
মথি||২৬|আকাশের পাখিদের দিকে তাকাও; তারা বোনেও না, কাটেও না, গোলাঘরেও জমায় না, অথচ তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তাদের খেতে দিয়ে থাকেন; তোমরা কি তাদের চেয়ে অধিক মূল্যবান নও?
মথি||২৭|আর তোমাদের মধ্যে কে চিন্তিত হয়ে নিজের আয়ুষ্কাল কিঞ্চিৎও বাড়াতে পারে?
মথি||২৮|আর পোশাকের জন্য কেন চিন্তিত হও? মাঠের লিলিফুলের কথা ভেবে দেখ তারা কেমন করে বেড়ে ওঠে: তারা তো শ্রম করে না, সুতোও কাটে না;
মথি||২৯|অথচ আমি তোমাদের বলছি, সলোমনও নিজের সমস্ত গৌরবে এগুলোর একটার মত সুসজ্জিত ছিলেন না
মথি||৩০|আচ্ছা, মাঠের যে ঘাস আজ আছে ও কাল চুল্লিতে ফেলে দেওয়া হবে, ঈশ্বর যখন তা এভাবে বিভূষিত করেন, তখন হে অল্পবিশ্বাসী, তোমাদের জন্য তিনি কি বেশি চিন্তা করবেন না?
মথি||৩১|অতএব, কী খাব বা কী পান করব বা কী পরব, এ বলে চিন্তিত হয়ো না
মথি||৩২|বিজাতীয়রাই এই সকল বিষয়ে ব্যস্ত থাকে; বাস্তবিকই তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা জানেন যে, তোমাদের এ সবকিছুর প্রয়োজন আছে
মথি||৩৩|তোমরা বরং প্রথমে তাঁর রাজ্য ও তাঁর ধর্মময়তার অন্বেষণ কর, তাহলে ওই সবকিছুও তোমাদের দেওয়া হবে
মথি||৩৪|সুতরাং আগামীকালের জন্য চিন্তিত হয়ো না: হ্যাঁ, আগামীকাল তার নিজের চিন্তায় নিজে চিন্তিত থাকবে; দিনের পক্ষে তার নিজের কষ্টই যথেষ্ট
মথি|||তোমরা বিচার করো না, যেন নিজেরা বিচারাধীন না হও;
মথি|||কেননা যে বিচারে তোমরা বিচার কর, সেই একই বিচারে তোমাদেরও বিচার করা হবে; এবং যে মাপকাঠিতে পরিমাপ কর, সেই মাপকাঠিতে তোমাদের জন্য পরিমাপ করা হবে
মথি|||তোমার ভাইয়ের চোখে যে কুটোটুকু রয়েছে, তুমি কেন তা লক্ষ কর, কিন্তু তোমার নিজের চোখে যে কড়িকাঠ রয়েছে, তা তুমি দেখ না?
মথি|||আবার, কেমন করে তুমি তোমার নিজের ভাইকে বলবে, এসো, আমি তোমার চোখ থেকে কুটোটুকুটা বের করে দিই, যখন তোমার নিজের চোখে একটা কড়িকাঠ রয়েছে?
মথি|||ভণ্ড! আগে নিজের চোখ থেকে কড়িকাঠটা বের করে ফেল, আর তখনই তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কুটোটুকুটা বের করার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে
মথি|||যা পবিত্র, তা কুকুরদের দিয়ো না, এবং তোমাদের মণিমুক্তা শূকরের সামনে ফেলো না; পাছে তারা পা দিয়ে তা মাড়িয়ে দেয়, পরে ফিরে তোমাদের ছিঁড়ে ফেলে
মথি|||যাচনা কর, তোমাদের দেওয়া হবে; খোঁজ, তোমরা খুঁজে পাবে; দরজায় ঘা দাও, তোমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হবে
মথি|||কেননা যে যাচনা করে, সে পায়; আর যে খোঁজে, সে খুঁজে পায়; আর যে ঘা দেয়, তার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হবে
মথি|||তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে যে, নিজের ছেলে রুটি চাইলে তাকে পাথর দেবে,
মথি||১০|কিংবা সে মাছ চাইলে তাকে সাপ দেবে?
মথি||১১|সুতরাং তোমরা মন্দ হয়েও যখন তোমাদের ছেলেদের ভাল ভাল জিনিস দিতে জান, তখন যারা তাঁর কাছে যাচনা করে, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা যে তাদের ভাল ভাল জিনিস দেবেন তা আরও কতই না নিশ্চিত
মথি||১২|অতএব সমস্ত বিষয়ে তোমরা লোকদের কাছ থেকে যেমন ব্যবহার প্রত্যাশা কর, তোমরাও তাদের প্রতি সেইমত ব্যবহার কর, কেননা এই তো বিধান-পুস্তক ও নবী-পুস্তকের সারকথা
মথি||১৩|সরু দরজা দিয়েই প্রবেশ কর, কেননা চওড়াই সেই দরজা ও প্রশস্তই সেই পথ, যা সর্বনাশের দিকে নিয়ে যায়; আর অনেকেই তা দিয়ে প্রবেশ করে
মথি||১৪|কিন্তু সরুই সেই দরজা ও সঙ্কীর্ণই সেই পথ, যা জীবনের দিকে নিয়ে যায়; আর অল্পজনই তার সন্ধান পায়
মথি||১৫|নকল নবীদের বিষয়ে সাবধান! তারা মেষের বেশে তোমাদের কাছে আসে, কিন্তু অন্তরে তারা শিকার-ললুপ নেকড়ে
মথি||১৬|তোমরা তাদের ফল দ্বারাই তাদের চিনতে পারবে লোকে কি কাঁটাগাছ থেকে আঙুরফল, বা শেয়ালকাঁটা থেকে ডুমুরফল সংগ্রহ করে?
মথি||১৭|একই প্রকারে প্রতিটি ভাল গাছে ভাল ফল ধরে, কিন্তু মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে
মথি||১৮|ভাল গাছে মন্দ ফল ধরতে পারে না, আর মন্দ গাছে ভাল ফল ধরতে পারে না
মথি||১৯|যে কোন গাছে ভাল ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হয়
মথি||২০|সুতরাং তোমরা তাদের ফল দ্বারাই তাদের চিনতে পারবে
মথি||২১|যারা আমাকে প্রভু, প্রভুবলে, তারা সকলে যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবে এমন নয়, কিন্তু আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা যে পালন করে, সে-ই প্রবেশ করবে
মথি||২২|সেইদিন অনেকে আমাকে বলবে, “প্রভু, প্রভু, আপনার নামে আমরা কি ভবিষ্যদ্বাণী দিইনি? আপনার নামে কি অপদূত তাড়াইনি? আপনার নামে কি বহু পরাক্রম-কর্ম সাধন করিনি?”
মথি||২৩|তখন আমি তাদের স্পষ্ট বলব: আমি কখনও তোমাদের জানিনি হে জঘন্য কর্মের সাধক, আমা থেকে দূর হও
মথি||২৪|অতএব যে কেউ আমার এই সকল বাণী শুনে তা পালন করে, সে তেমন এক বুদ্ধিমান লোকের মত, যে শৈলের উপরে নিজের ঘর গাঁথল
মথি||২৫|বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, বাতাস বইল ও সেই ঘরে আঘাত হানল, তবু তা পড়ল না, কারণ তার ভিত শৈলের উপরেই স্থাপিত ছিল
মথি||২৬|কিন্তু যে কেউ আমার এই সকল বাণী শুনে তা পালন করে না, সে তেমন এক নির্বোধ লোকের মত, যে বালুর উপরে নিজের ঘর গাঁথল
মথি||২৭|বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, বাতাস বইল ও সেই ঘরে আঘাত হানল, আর তা পড়েই গেলতার পতন কেমন সাংঘাতিক!
মথি||২৮|যখন যীশু এবিষয়ে তাঁর সমস্ত বক্তব্য শেষ করলেন, তখন তাঁর এই উপদেশে লোকে বিস্ময়মগ্ন হল,
মথি||২৯|কারণ তিনি অধিকারসম্পন্ন ব্যক্তির মতই তাদের উপদেশ দিতেনতাদের শাস্ত্রীদের মত নয়
মথি|||তিনি পর্বত থেকে নেমে এলে পর বহু লোকের ভিড় তাঁর অনুসরণ করল
মথি|||আর হঠাৎ সংক্রামক চর্মরোগে আক্রান্ত একজন লোক এগিয়ে এসে তাঁর সামনে প্রণিপাত করে বলল, ‘প্রভু, আপনি ইচ্ছা করলে আমাকে শুচীকৃত করতে পারেন
মথি|||হাত বাড়িয়ে তিনি এই বলে তাকে স্পর্শ করলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ইচ্ছা করি শুচীকৃত হওআর তখনই সে চর্মরোগ থেকে শুচীকৃত হল
মথি|||যীশু তাকে বললেন, ‘দেখ, একথা কাউকে বলো না; কিন্তু গিয়ে যাজকের কাছে নিজেকে দেখাও, ও মোশীর নির্দেশ অনুসারে নৈবেদ্য উৎসর্গ কর যেন তাদের কাছে তা সাক্ষ্যস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়
মথি|||তিনি কাফার্নাউমে প্রবেশ করলে একজন শতপতি এসে তাঁকে অনুনয় করে
মথি|||বললেন, ‘প্রভু, আমার দাস পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায় বাড়িতে শুয়ে আছে, সে ভীষণ যন্ত্রণায় ভুগছে
মথি|||তিনি তাঁকে বললেন, ‘নিজেই গিয়ে আমি তাকে নিরাময় করব
মথি|||শতপতি উত্তরে বললেন, ‘প্রভু, আপনি যে আমার গৃহে পদধূলি দেন, আমি তার যোগ্য নই; আপনি কেবল বাণী দিন, তাতেই আমার দাস সুস্থ হয়ে উঠবে
মথি|||কেননা আমিও কর্তৃপক্ষের অধীন, আবার আমার সৈন্যরাও আমার অধীন; আমি একজনকে যাওবললে সে যায়, আর অন্যজনকে এসোবললে সে আসে, আর আমার দাসকে একাজ করবললে সে তা করে
মথি||১০|তেমন কথা শুনে যীশুর আশ্চর্য লাগল, এবং যারা তাঁর অনুসরণ করছিল তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ইস্রায়েলের মধ্যে কারও এত গভীর বিশ্বাস দেখতে পাইনি
মথি||১১|আর আমি তোমাদের বলছি, অনেকে পুব ও পশ্চিম থেকে আসবে, এবং আব্রাহাম, ইসায়াক ও যাকোবের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যের ভোজে একসাথে বসবে;
মথি||১২|কিন্তু রাজ্যের সন্তানেরা বাইরের অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত হবে: সেখানে হবে কান্না ও দাঁত ঘষাঘষি
মথি||১৩|আর সেই শতপতিকে যীশু বললেন, ‘আপনি বাড়ি যান, যেমন বিশ্বাস করলেন, আপনার প্রতি সেইমত হোকআর সেই মুহূর্তেই তাঁর দাস সুস্থ হয়ে উঠল
মথি||১৪|এবং পিতরের বাড়িতে ঢুকে যীশু দেখলেন, তাঁর শাশুড়ী বিছানায় শুয়ে আছেন, তাঁর জ্বর হয়েছে
মথি||১৫|তিনি তাঁর হাত স্পর্শ করলেন, আর জ্বর ছেড়ে গেল; তখন তিনি উঠে যীশুর সেবাযত্ন করতে লাগলেন
মথি||১৬|সন্ধ্যা হলে লোকেরা অপদূতগ্রস্ত বহু মানুষকে তাঁর কাছে আনল, আর তিনি বাণী দ্বারাই সেই অপদূতদের তাড়িয়ে দিলেন, ও সকল পীড়িত লোককে নিরাময় করলেন,
মথি||১৭|যেন নবী ইসাইয়ার মধ্য দিয়ে উচ্চারিত এই বচন পূর্ণ হয়,
তিনি আমাদের অসুস্থতা তুলে বহন করলেন;
বরণ করে নিলেন আমাদের রোগ-ব্যাধি
মথি||১৮|নিজের চারদিকে বহু লোকের ভিড় দেখে যীশু ওপারে যাবার জন্য নির্দেশ দিলেন
মথি||১৯|তখন একজন শাস্ত্রী কাছে এসে তাঁকে বললেন, ‘গুরু, আপনি যেইখানে যাবেন, আমি আপনার অনুসরণ করব
মথি||২০|যীশু তাঁকে বললেন, ‘শিয়ালদের গর্ত আছে, আর আকাশের পাখিদের বাসা আছে; কিন্তু মানবপুত্রের মাথা গোঁজবার কোথাও স্থান নেই
মথি||২১|শিষ্যদের আর একজন তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, অনুমতি দিন, আমি আগে আমার পিতাকে সমাধি দিয়ে আসি
মথি||২২|কিন্তু যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমার অনুসরণ কর; মৃতেরাই নিজ নিজ মৃতদের সমাধি দিক
মথি||২৩|পরে তিনি নৌকায় উঠলে তাঁর শিষ্যেরা তাঁর অনুসরণ করলেন
মথি||২৪|আর হঠাৎ সমুদ্রে প্রচণ্ড ঝড় উঠল, এমনকি, ঢেউয়ের চাপে নৌকাটা প্রায় ডুবুডুবু হচ্ছিল; তবু তিনি ঘুমোচ্ছিলেন
মথি||২৫|তাই তাঁরা কাছে গিয়ে এই বলে তাঁকে জাগিয়ে তুললেন, ‘প্রভু, ত্রাণ করুন, আমরা তো মরতে বসেছি!
মথি||২৬|তিনি তাঁদের বললেন, ‘হে অল্পবিশ্বাসী, তোমরা এত ভীত হচ্ছ কেন?’ তখন তিনি উঠে বাতাস ও সমুদ্রকে ধমক দিলেন; তাতে মহানিস্তব্ধতা নেমে এল
মথি||২৭|সেই লোকেরা আশ্চর্য হয়ে বলল, ‘ইনি কেমন লোক! বাতাস ও সমুদ্রও যে তাঁর প্রতি বাধ্য হয়!
মথি||২৮|তিনি ওপারে গাদারীয়দের দেশে গিয়ে পৌঁছলে দুজন অপদূতগ্রস্ত লোক সমাধিগুহাগুলোর মধ্য থেকে বেরিয়ে এসে তাঁর দিকে এগিয়ে এল তারা এতই হিংস্র ছিল যে, ওই পথ দিয়ে কেউই যেতে পারত না
মথি||২৯|তারা হঠাৎ চিৎকার করে বলল, ‘হে ঈশ্বরপুত্র, আমাদের সঙ্গে আপনার আবার কী? আপনি কি আসল সময়ের আগেই আমাদের জ্বালাযন্ত্রণা দিতে এখানে এসেছেন?’
মথি||৩০|সেখান থেকে কিছু দূরে বিরাট এক পাল শূকর চরে বেড়াচ্ছিল,
মথি||৩১|আর অপদূতেরা মিনতি করে তাঁকে বলল, ‘আমাদের যদি তাড়াতে যাচ্ছেন, তবে ওই শূকরের পালের মধ্যে আমাদের পাঠিয়ে দিন
মথি||৩২|তিনি তাদের বললেন, ‘তবে যাও!আর তারা বেরিয়ে এসে শূকরদের মধ্যে গেল; আর দেখ, গোটা পাল হঠাৎ ছুটে গিয়ে পাহাড়ের খাড়া ধার থেকে সমুদ্রের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ল ও জলে ডুবে মরল
মথি||৩৩|তখন শূকরদের রাখালেরা পালিয়ে গেল, ও শহরে গিয়ে সমস্ত ব্যাপার, বিশেষভাবে সেই অপদূতগ্রস্তদের কথা জানিয়ে দিল
মথি||৩৪|আর দেখ, শহরের সমস্ত লোক যীশুর সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়ে পড়ল, ও তাঁকে দেখেই তাঁকে মিনতি করল, তিনি যেন তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যান
মথি|||তিনি নৌকায় উঠে পার হলেন এবং নিজ শহরে এলেন
মথি|||আর দেখ, কয়েকজন লোক তাঁর কাছে খাটিয়ায় শুয়ে থাকা একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোককে নিয়ে এল তাদের বিশ্বাস দেখে যীশু সেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোককে বললেন, ‘বৎস, সাহস কর, তোমার পাপ ক্ষমা করা হল
মথি|||এতে কয়েকজন শাস্ত্রী ভাবতে লাগলেন, ‘এ ঈশ্বরনিন্দা করছে!
মথি|||তাদের মনের কথা জানতেন বিধায় যীশু বললেন, ‘আপনারা কেন মনে মনে তেমন মন্দ ভাবনা ভাবছেন?
মথি|||বাস্তবিকই কোন্‌টা বলা সহজ, “তোমার পাপ ক্ষমা করা হল”, না তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও”?
মথি|||আচ্ছা, মানবপুত্রের যে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার অধিকার আছে, তা যেন আপনারা জানতে পারেন, এইজন্যতিনি তখন সেই পক্ষাঘাতগ্রস্তকে বললেনওঠ, তোমার খাটিয়া তুলে নাও আর বাড়ি যাও
মথি|||আর সে উঠে দাঁড়িয়ে বাড়ি চলে গেল
মথি|||তা দেখে লোকের ভিড় ভয়ে অভিভূত হল, এবং ঈশ্বর মানুষকে এমন অধিকার দিয়েছেন বলে তারা তাঁর গৌরবকীর্তন করল
মথি|||সেখান থেকে এগিয়ে যেতে যেতে যীশু দেখলেন, মথি নামে একজন লোক শুল্কঘরে বসে আছেন; তিনি তাঁকে বললেন, ‘আমার অনুসরণ করআর তিনি উঠে তাঁর অনুসরণ করলেন
মথি||১০|তখন এমনটি ঘটল যে, তিনি বাড়িতে ভোজে বসেছেন, সেসময় অনেক কর-আদায়কারী ও পাপী এসে যীশুর ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে বসল
মথি||১১|তা দেখে ফরিসিরা তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘তোমাদের গুরু কেন কর-আদায়কারী ও পাপীদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করছেন?’
মথি||১২|কথাটা শুনে তিনি বললেন, ‘সুস্থ লোকদেরই যে চিকিৎসকের প্রয়োজন হয় এমন নয়, যারা পীড়িত, তাদেরই প্রয়োজন
মথি||১৩|আপনারা গিয়ে এই বচনের অর্থ শিখে নিন: আমি দয়াই চাই, বলিদান নয়; কেননা আমি ধার্মিকদের নয়, পাপীদেরই আহ্বান জানাতে এসেছি
মথি||১৪|তখন যোহনের শিষ্যেরা তাঁকে এসে বলল, ‘ফরিসিরা ও আমরা উপবাস পালন করি, কিন্তু আপনার শিষ্যেরা তা করে না, এর কারণ কী?’
মথি||১৫|যীশু তাঁদের বললেন, ‘বর সঙ্গে থাকতে কি বরযাত্রীরা বিলাপ করতে পারে? কিন্তু এমন দিনগুলি আসবে, যখন বরকে তাদের কাছ থেকে তুলে নেওয়া হবে; তখন তারা উপবাস করবে
মথি||১৬|পুরাতন পোশাকে কেউ কোরা কাপড়ের তালি দেয় না, কেননা তার তালিতে পোশাক ছিঁড়ে যায় ও ছেঁড়াটা আরও বড় হয়
মথি||১৭|আরও, লোকে পুরাতন চামড়ার ভিস্তিতে নতুন আঙুররস রাখে না; রাখলে ভিস্তিগুলো ফেটে যায়, ফলে আঙুররসও পড়ে যায়, ভিস্তিগুলোও নষ্ট হয়; লোকে বরং নতুন আঙুররস নতুন চামড়ার ভিস্তিতেই রাখে, তাতে দুই-ই রক্ষা পায়
মথি||১৮|তিনি তাদের এই সমস্ত কথা বলছেন, এমন সময় সমাজনেতাদের একজন হঠাৎ এসে তাঁর সামনে প্রণিপাত করে বললেন, ‘আমার মেয়েটি এইমাত্র মারা গেছে; কিন্তু আপনি এসে তার উপরে হাত রাখুন, আর সে বেঁচে উঠবে
মথি||১৯|যীশু উঠে তাঁর সঙ্গে চললেন, তাঁর শিষ্যেরাও চললেন
মথি||২০|আর তখন বারো বছর ধরে রক্তস্রাবে আক্রান্ত একজন স্ত্রীলোক হঠাৎ তাঁর পিছন থেকে এসে তাঁর পোশাকের ধারটুকু স্পর্শ করল;
মথি||২১|কারণ সে মনে মনে ভাবছিল, ‘তাঁর পোশাক-মাত্র স্পর্শ করতে পারলেই আমি পরিত্রাণ পাব
মথি||২২|তখন যীশু মুখ ফিরিয়ে তাকে দেখে বললেন, ‘কন্যা, সাহস কর, তোমার বিশ্বাস তোমার পরিত্রাণ সাধন করেছেআর স্ত্রীলোকটি সেই ক্ষণেই পরিত্রাণ পেল
মথি||২৩|আর যীশু সেই সমাজনেতার বাড়িতে এসে যখন দেখলেন, বাঁশি-বাদকেরা রয়েছে ও লোকেরা কোলাহল করছে,
মথি||২৪|তখন বললেন, ‘সরে যাও, বালিকাটি তো মারা যায়নি, ঘুমিয়ে রয়েছেআর তারা তাঁকে উপহাস করল;
মথি||২৫|কিন্তু লোকদের বের করে দেওয়া হলে তিনি ভিতরে গিয়ে মেয়েটির হাত ধরলেন, আর সে উঠে দাঁড়াল
মথি||২৬|আর এই ঘটনার কথা সারা অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল
মথি||২৭|যীশু সেখান থেকে চলে যাচ্ছেন, সেসময় দুজন অন্ধ চিৎকার করতে করতে এই বলে তাঁর অনুসরণ করছিল: দাউদসন্তান, আমাদের প্রতি দয়া করুন
মথি||২৮|তিনি ঘরে প্রবেশ করার পর সেই অন্ধরা তাঁর কাছে এল; যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কি বিশ্বাস কর যে, আমি একাজ সাধন করতে পারি?’ তারা তাঁকে বলল, ‘হ্যাঁ, প্রভু
মথি||২৯|তখন তিনি এই বলে তাদের চোখ স্পর্শ করলেন, ‘তোমাদের যেমন বিশ্বাস, তোমাদের তেমনটি হোক
মথি||৩০|তখন তাদের চোখ খুলে গেল আর যীশু তাদের কঠোর ভাবে নির্দেশ করে বললেন, ‘দেখ, কেউই যেন একথা জানতে না পারে
মথি||৩১|কিন্তু তারা বাইরে গিয়ে সারা অঞ্চল জুড়ে তাঁর কথা ছড়িয়ে দিল
মথি||৩২|তারা বাইরে যাচ্ছে, আর দেখ, লোকেরা অপদূতগ্রস্ত একজন বোবা মানুষকে তাঁর কাছে নিয়ে গেল
মথি||৩৩|অপদূতটাকে তাড়ানো হলে সেই বোবা কথা বলতে লাগল; আর লোকের ভিড় আশ্চর্য হয়ে বলল, ‘ইস্রায়েলের মধ্যে এমন ব্যাপার কখনও দেখা যায়নি
মথি||৩৪|কিন্তু ফরিসিরা বললেন, ‘অপদূতদের অধিপতির প্রভাবেই সে অপদূত তাড়ায়
মথি||৩৫|যীশু সকল শহরে ও গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন; তিনি তাদের সমাজগৃহে উপদেশ দিতেন ও রাজ্যের শুভসংবাদ প্রচার করতেন, এবং সব ধরনের রোগ ও সব ধরনের ব্যাধি নিরাময় করতেন
মথি||৩৬|বহু লোকের ভিড় দেখে তিনি তাদের প্রতি দয়ায় বিগলিত হলেন, কেননা তারা ব্যাকুল ও পরিশ্রান্ত ছিল, যেন পালকবিহীন মেষপালেরই মত
মথি||৩৭|তখন তিনি নিজের শিষ্যদের বললেন, ‘ফসল প্রচুর বটে, কিন্তু কর্মী অল্প;
মথি||৩৮|তাই ফসলের প্রভুর কাছে মিনতি জানাও, তিনি যেন নিজ শস্যখেতে কর্মী পাঠান


Comentarios